মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার, আবারও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেড করা হয়েছে এবং দিন শেষে এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে নতুন অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনটি চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ধারাবাহিকতা নির্দেশ করছে, এবং দৈনিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি। পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বর্তমানে ট্রেডারদের জন্য তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিছু কিছু প্রতিবেদন মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তবে এই প্রতিক্রিয়ার ফলে এই পেয়ারের মূল্যের সামগ্রিক মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ে না, কারণ মৌলিক প্রেক্ষাপট প্রতিদিনই ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
মঙ্গলবারের তিনটি প্রতিবেদন বেশ উল্লেখযোগ্য: জুন মাসে ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে 2% হয়েছে, যা ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে না। মার্কিন ISM ম্যানুফ্যাকচারিং PMI বেড়ে 49-এ পৌঁছেছে, যা এখনও নেতিবাচক মান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ 50-এর নিচে যেকোনো ফলাফল উৎপাদন কার্যক্রম সংকোচনের ইঙ্গিত দেয়। JOLTs চাকরির শূন্যপদের সংখ্যা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হয়েছে। মার্কিন সেশনে ডলারের মূল্যের সামান্য উত্থান দেখা গেছে, যা এই পেয়ারের মূল্যের চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় কোনো প্রভাব ফেলেনি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5 মিনিটের টাইমফ্রেমে মঙ্গলবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমে, এই পেয়ার 1.1802 লেভেলের উপরে কনসোলিডেট করে এবং পরে মূল্য এই লেভেলের নিচে নেমে যায়। দিনের শেষে এই লেভেলটি 1.1808-এ সংশোধন করা হয়। উভয় ক্ষেত্রেই, এই পেয়ারের মূল্য সঠিক দিকেই কমপক্ষে 15 পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করে, যার ফলে কোনো পজিশন থেকে লোকসান হয়নি। এমনকি শর্ট ট্রেড থেকে আনুমানিক 15–20 পিপস লাভ হয়েছিল।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যা ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর শুরু হয়েছিল এবং সম্ভবত পরবর্তী প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা চলমান থাকবে। শুধুমাত্র ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট—এই বিষয়টিই ডলারকে চাপের মধ্যে রাখার জন্য যথেষ্ট। এমনকি ট্রাম্প-সম্পর্কিত সরাসরি কোনো খবর না থাকলেও, এটি মার্কিন কারেন্সির দর বৃদ্ধির নিশ্চয়তা দেয় না। বাণিজ্যযুদ্ধ, অর্থনৈতিক মন্দা, এবং ট্রাম্প ও ফেডারেল রিজার্ভের চলমান দ্বন্দ্ব—সব মিলিয়ে ডলারের উপর দীর্ঘমেয়াদি আস্থার ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
বুধবার, ট্রেন্ডলাইনের সহায়তায় EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট চলমান থাকতে পারে। এই পেয়ারের মূল্যের নিকটবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে 1.1851-এর লেভেল।
5 মিনিটের চার্টে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1561–1.1571, 1.1609, 1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
বুধবার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত রয়েছে, তবে উল্লেখযোগ্য যে, যুক্তরাষ্ট্রে বিরোধী শিবিরের সাথে ট্রাম্পের লড়াই এখনও চলমান রয়েছে। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে ADP কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে এটি এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে বড় কোনো প্রভাব ফেলবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।