বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার, যেন কোনো আকাশচুম্বী ভবন থেকে পাথর ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে—এমন গতিতে GBP/USD পেয়ারের দরপতন ঘটেছে, যার ফলে কারেন্সি বিশ্লেষকরা তৎক্ষণাৎ এই দরপতনের পেছনে কারণ অনুসন্ধানে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে আমরা মার্কেটে সৃষ্ট এই ধরনের মুভমেন্টকে একটু ভিন্নভাবে দেখছি: সব সময় এই ধরনের মুভমেন্টের পেছনে স্পষ্ট কোনো কারণ থাকে না। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য দীর্ঘ সময় ধরে ঊর্ধ্বমুখী ছিল, এটি অতিরিক্ত ক্রয় করা হয়েছিল, এবং মার্কেটে এমন অনেক মার্কেট মেকার থাকে যারা নিয়মিতভাবে ছোট ট্রেডারদের পজিশনের লিকুইডেশন ঘটানোর তালে থাকে। অতএব, ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে০ যে আমরা যা দেখলাম, সেটি ব্রিটিশ কারেন্সির নতুন একটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার আগে ধ্বস হতে পারে।
আমরা হঠাৎ করে পাউন্ডের "আকাশ থেকে পড়া" এই ধরনের দরপতনের পেছনে সুস্পষ্ট কোনো কারণ দেখছি না। আজ সবকিছু নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের নন-ফার্ম পেরোল ও বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফলের ওপর। যদি এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল শক্তিশালী হয়, তাহলে ডলার দ্বিতীয় দিনের মতো শক্তিশালী হতে পারে। আর যদি প্রতিবেদনের ফলাফল দুর্বল হয়, তবে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা একেবারে হঠাৎ করেই শেষ হয়ে যেতে পারে। ডলারের মূল্যের সামগ্রিক মৌলিক প্রেক্ষাপট এখনো তেমনভাবে পরিবর্তিত হয়নি যাতে করে আমরা এটির ব্যাপক দর বৃদ্ধির আশা করতে পারি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বুধবার দিনজুড়ে অনেকগুলো ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, যার বেশিরভাগই বাস্তবায়ন করা কঠিন ছিল। আমরা আগেই বলেছি, এই ধরনের তীব্র দরপতনের পেছনে বাস্তবিক অর্থে কোনো কারণ ছিল না। অর্থাৎ, পাউন্ডের এই দরপতনের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব ছিল না। ফলে, কেবলমাত্র টেকনিক্যাল সিগন্যালগুলোর প্রতিক্রিয়া হিসেবে কাজ করাই সম্ভব ছিল।
প্রথম সেল সিগন্যাল গঠনের আগেই দরপতন শুরু হয়েছিল, এবং এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট অত্যন্ত অনিয়মিত ছিল। আমাদের মতে, কেবলমাত্র দুটি সেটআপই যথাযথভাবে ট্রেড করার জন্য উপযুক্ত ছিল—তা হলো 1.3643–1.3652 রেঞ্জের ব্রেকআউট এবং 1.3580–1.3592 এরিয়ার উপরে কনসোলিডেশন।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের তীব্র দরপতন দেখা গেলেও আমরা মনে করি না যে এটি "ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার" সূচনা নির্দেশ করে। মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা এখনো ডলার বিক্রি করছে কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন কোনো নেতিবাচক খবরের জন্য অপেক্ষা করছে যাতে আবারও ডলার বিক্রি করা যায়। যতক্ষণ না মার্কেটের ট্রেডাররা বাণিজ্যযুদ্ধ শেষ হওয়ার বাস্তব কোনো সংকেত পায় এবং ট্রাম্প এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া বন্ধ না করেন যা নেয়ার তাঁর কোনো আইনগত ক্ষমতা নেই এবং যা মার্কেটের ট্রেডারদের হতবাক করে ফেলে ততক্ষণ এই প্রবণতা চলমান থাকবে।
বৃহস্পতিবার, যেকোনো দিকেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, কারণ আজকের মার্কিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলোর ফলাফলই মূলত মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতি নির্ধারণ করবে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে এখন যে লেভেলগুলোতে ট্রেড করা যেতে পারে তা হলো: 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3518-1.3535, 1.3580-1.3592, 1.3643-1.3652, 1.3682, 1.3763, 1.3814-1.3832। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে কেবলমাত্র একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে—সেটি হচ্ছে জুন মাসের সার্ভিসেস বা পরিষেবা সংক্রান্ত চূড়ান্ত PMI। তবে, যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে: ISM সার্ভিসেস বা পরিষেবা সংক্রান্ত সূচক, নন-ফার্ম পেরোল, এবং বেকারত্বের হার। এই তিনটি প্রতিবেদনই মার্কিন ট্রেডিং সেশনের সময় এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট নির্ধারণ করবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।