১. এআই দৌড়ে নেতৃত্বে ব্যর্থতা
জেনারেটিভ AI-এর বিস্ফোরক উত্থানের পরও অ্যাপল অনেকটা দর্শকের ভূমিকায় ছিল, যখন প্রতিদ্বন্দী কোম্পানিগুলো একে একে নিজেদের পণ্যে নিউরাল নেটওয়ার্ক একীভূত করে। কেবল গত বছর অ্যাপল তাদের অ্যাপল ইন্টিলিজেন্স প্রকাশ করে, যা ব্যবহারকারীদের আগ্রহ পুনরুদ্ধার এবং পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি লাঘব করার একটি উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে এর উদ্বোধন বারবার দেরির সম্মুখীন হয়েছে ও প্রযুক্তিগত সমস্যায় জর্জরিতও ছিল। যেখানে ওপেনএআই ও গুগল এআই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, অ্যাপল সেখানে এখনো নিজের অবস্থান খুঁজে বেড়াচ্ছে, এবং সেটি এমন একটি খাত যা এই যুগের সবচেয়ে দ্রুত বিস্তারমান ক্ষেত্রের একটি।
২. নতুন বিলিয়ন-ডলারের আইডিয়া নেই
গত বছর অ্যাপল প্রজেক্ট টাইটান বন্ধ করে দেয়—যা একটি ব্যাপক মাত্রার দশ বছরব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রকল্প ছিল এবং এটির মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন শ্রেণির পণ্য তৈরি করার কথা ছিল। একই সময়ে AR চশমার কাজ, অ্যাপল ওয়াচের ক্যামেরা পরীক্ষা, এবং ইন-হাউস ডিসপ্লে উৎপাদন বন্ধ হয়। এখন অ্যাপলের কাছ থেকে আর কোনো যুগান্তকারী উদ্ভাবন আসছে না। অ্যাপল খরচ কমাচ্ছে, কিন্তু সেইসাথে অভ্যন্তরীণ গতি হারাচ্ছে। স্থিতিশীল আয়ের মধ্যে এই পরিস্থিতি ক্রমেই কৌশলের চেয়ে বিভ্রান্তি বলেই বেশি মনে হচ্ছে।
৩. হেডসেট মার্কেটে পিছিয়ে পড়া
অ্যাপল তার হেডসেট যাত্রা শুরু করে ভিশন প্রো দিয়ে—যা প্রযুক্তিগতভাবে চমৎকার হলেও দামি, ভারী, আর সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্য স্পষ্টভাবেই উদ্দেশ্যহীন ছিল। প্রত্যাশার বিপরীতে, ডিভাইসটি ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি করতে পারেনি, কারণ এর কার্যকারিতা সীমিত ছিল, সেইসাথে স্বল্প কনটেন্ট, আর দৈনন্দিন ব্যবহারে ওজন ও ডিজাইনে প্রতিবন্ধকতাও ছিল। যেখানে প্রতিযোগীরা ব্যাপক গ্রহণযোগ্য ডিভাইসের দিকে এগিয়ে চলেছে, অ্যাপল এখনো এমন একটি পণ্য দিচ্ছে, যা বাণিজ্যিক প্রযুক্তির চেয়ে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপেরিমেন্ট বলেই মনে হয়।
৪. স্থিতিশীল আয় হারানোর ঝুঁকি
গুগলের সঙ্গে সার্চ চুক্তি, যার মাধ্যমে গুগল ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে অ্যাপলের পণ্যে ব্যবহৃত হয়, অ্যাপলকে বছরে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার এনে দেয়, যা কার্যত বিনা ব্যয়ের মাধ্যমে আয়ের উৎস। কিন্তু এই আয়ের উৎস এখন হুমকির মুখে—গুগলের বিরুদ্ধে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা চুক্তিটিকে প্রতিযোগিতাবিরোধী বলে দাবি করছে। যদি এটি বাতিল হয়, তাহলে অ্যাপল তাদের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরিষেবাভিত্তিক আয়ের উৎসগুলোর একটি হারাবে। যদিও কোম্পানিটি ওপেনএআই-এর মতো অন্যান্য এআই প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে, কিন্তু এই আয়ের বিকল্প খুঁজে পাওয়া সহজ হবে না।
৫. অ্যাপ স্টোরের ওপর চাপ
ক্যালিফোর্নিয়ার এক আদালতের রায় অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর কমিশন ফি মডেলের ওপর আঘাত হানে। এখন ডেভেলপাররা অ্যাপলের পেমেন্ট পদ্ধতি বাইপাস করে ব্যবহারকারীদের বাইরের পেমেন্ট অপশনের দিকে নিয়ে যেতে পারবে। এর ফলে সাবস্ক্রিপশন ও ইন-অ্যাপ পারচেস থেকে অ্যাপের আয় হ্রাস পেতে পারে। একইসাথে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বৈশ্বিক পর্যায়েও কার্যকর হতে পারে।
৬. বাড়তে থাকা অ্যান্টিট্রাস্ট ঝুঁকি
অ্যাপল ক্রমেই আরও বেশি অ্যান্টিট্রাস্ট নজরদারির আওতায় আসছে। ২০২৪ সালের মার্চে, মার্কিন বিচার বিভাগ ও ১৬টি অঙ্গরাজ্য অভিযোগ তোলে—অ্যাপল বাজারে প্রতিযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করছে ও ব্যবহারকারীদের পছন্দ সীমিত করছে, যেখানে তারা মেসেজিং, স্মার্টওয়াচ, ক্লাউড গেমিং থেকে শুরু করে ডিজিটাল ওয়ালেট পর্যন্ত অ্যাপল ইকোসিস্টেমের বিভিন্ন উপাদানের কথা উল্লেখ করেছে। একইসাথে, ইউরোপে ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট কার্যকর হয়েছে, যা অ্যাপ স্টোরে অ্যাপলের নিয়ন্ত্রণ সীমিত করছে।
৭. শুল্কের হুমকি ও সাপ্লাই চেইন পুনর্গঠন
চীনা উৎপাদনের ওপর নির্ভরতার কারণে অ্যাপল অর্থনৈতিক হুমকির মুখে পড়েছে। ট্রাম্প এপ্রিল মাসে সম্ভাব্যভাবে ১৪৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে এই চাপ আরও বাড়িয়ে তোলেন। যদিও অ্যাপল কিছু উৎপাদন কারখানা ভারতেও সরিয়ে নিচ্ছে, তবুও চীনের উপর নির্ভরতা রয়েই গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে উৎপাদিত স্মার্টফোনের ওপর যদি শুল্ক আরোপ হয়, তবে সেটি অ্যাপলের মূল্য নির্ধারণের কৌশলে বড় প্রভাব ফেলবে। এমনকি অ্যাপল নিজেও স্বীকার করেছে যে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হবে না।
৮. টিম কুকের বিদায় ও নেতৃত্ব সংকট
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অ্যাপলকে পরিচালনা করে আসা টিম কুক ২০২৫ সালে ৬৫ বছরে পদার্পণ করবেন। ফলে নেতৃত্ব বদলের প্রশ্ন এখন জোরালো হচ্ছে। তার অনেক ঘনিষ্ঠ সহকর্মীর বয়সও কাছাকাছি, তাই একসাথে একাধিক প্রস্থানের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। হার্ডওয়্যার বিভাগের প্রধান জন টারনাস সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে আলোচনায় রয়েছে, তবে নেতৃত্ব বদল প্রক্রিয়া সহজ হবে না।
৯. চীনে বিক্রি কমে যাওয়া
চীন দীর্ঘদিন ধরেই অ্যাপলের বিক্রি ও সাপ্লাই চেইনের মূল ভিত্তি ছিল। তবে দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশটিতে আয়ের পরিমাণ ২%-এরও বেশি কমেছে, যা এমনকি বিশ্লেষক পূর্বাভাসেরও নিচে রয়েছে। স্থানীয় ব্র্যান্ডের বাড়তে থাকা প্রতিযোগিতা, বিদেশি প্রযুক্তির ওপর বিধিনিষেধ ও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এই ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে। এক সময়ের সুবিধা এখন ক্রমেই অনিশ্চয়তার উৎস হয়ে উঠছে।
১০. আইফোনের চাহিদা হ্রাস
আইফোন ১৬ নিয়ে নানা প্রচারণা ও AI ফিচার ওপর জোর দেওয়া সত্ত্বেও এটির চাহিদা প্রত্যাশার চেয়ে কম বলে পরিলক্ষিত হয়েছে। ডিসেম্বর প্রান্তিকে আইফোন থেকে আয় ১% হ্রাস পেয়েছে — যা একটি দুশ্চিন্তার বিষয়, কারণ এই পণ্য এখনও অ্যাপলের মোট আয়ের প্রায় অর্ধেক জোগান দেয়। কম দামের আইফোন ১৬ই বাজারে চাহিদা বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে: এটির দামও একই ধরনের অন্যান্য ফোনের তুলনায় বেশি ছিল, কিন্তু বৈপ্লবিক কোনো ফিচার ছিল না। সত্যিকারের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি না থাকায় ডিভাইস আপগ্রেড কার্যক্রম আরও ধীরগতির হয়ে পড়ছে।
-
Grand Choice
Contest by
InstaForexInstaForex always strives to help you
fulfill your biggest dreams.প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করুন -
চ্যান্সি ডিপোজিটআপনার অ্যাকাউন্টে $3,000 জমা করুন এবং $4000 এর অধিক নিন!
চ্যান্সি ডিপোজিট প্রচারাভিযানে আমরা জুলাই $4000 লটারি করেছি! একটি ট্রেডিং অ্যাকাউন্টে $3,000 জমা করে এই অর্থ জেতার একটি সুযোগ নিন! এই শর্ত পূরণ করে, আপনি একজন অংশগ্রহণকারী হতে পারবেন।প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করুন -
বুদ্ধিমত্তার সাথে ট্রেড করুন, ডিভাইস জিতুনআপনার অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে $৫০০ টপ আপ করুন, প্রতিযোগিতার জন্য সাইন আপ করুন এবং মোবাইল ডিভাইস জেতার সুযোগ পান।প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করুন